মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১১

Shomokal shompadokio 22 march 2011

editorial of daily shomokal, 22nd march 2011


মানুষের বিরোধে প্রাণ যায় কুমিরের
0%
 
গড় রেটিং:
 
রেটিং :
Bookmark and Share
দেশের প্রথম ও একমাত্র বাণিজ্যিক কুমির চাষ প্রকল্পটি গভীর সংকটে পড়েছে। উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে গত এক মাসে প্রকল্পের শতাধিক কুমির মারা গেছে এবং আরও এক হাজারের মতো কুমিরের জীবন সংশয়ের শঙ্কা। প্রকল্পের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে শিগগিরই বাস্তবানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এবং বিবদমান মালিকদের মধ্যকার বিরোধ নিরসনে এগিয়ে না গেলে রফতানিমুখী এ খাতটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে গত সোমবার সমকালের তৃতীয় পৃষ্ঠায় 'মালিকানা দ্বন্দ্বে মারা যাচ্ছে কুমির' শিরোনামে প্রকাশিত এক রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। রিপোর্টটিতে প্রকল্পের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মধ্যকার বিরাজমান দ্বন্দ্বকেই বর্তমান সংকট তৈরির জন্য দায়ী করা হয়েছে। তারা উভয়ে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তকারী কর্মকর্তাও বিরোধের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কেন এই বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য মালিকদের বক্তব্য অভিন্ন। তারা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় এড়াতে চেষ্টা করেছেন। তবে এটা স্পষ্ট, ব্যবসাটি লাভজনক হয়ে ওঠার কারণেই এর মালিকানা পুরোপুরি এক পক্ষের হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। অবশ্য অন্য পক্ষের ব্যবসা সম্প্রসারণ প্রস্তাবে দ্রুত সাড়া দিতে না পারাও সংকট আরও গভীর হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। বাঙালির করপোরেট ব্যবসার ইতিহাস বেশিদিনের নয়। সাধারণত ব্যবসা লাভজনক ও বড় হতে থাকলেই এর শরিকরা নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য উন্মুখ হয়ে ওঠেন এবং এমনকি ব্যবসা করায়ত্ত করার জন্য বিরোধ চরমে ওঠাও বিচিত্র নয়। অথচ মালিক পক্ষের সবাই তাদের নিজ নিজ অধিকার ও স্বত্ব অনুযায়ী লাভ-লোকসানকে ভাগ করে নেওয়া এবং ব্যবসায় অগ্রগতিতে অবদান রাখলে এর থেকে সবাই অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন। অবশ্য কোম্পানি যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি-না, তার খোঁজখবর রাখা এবং আইন অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করা এর লগি্নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচিত। কারণ এর লাভ-লোকসানের ওপর তাদের ধার দেওয়া অর্থ লাভসহ ফেরত পাওয়া নির্ভর্র করে। দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক কুমির চাষ প্রকল্পটিকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে লগ্নকারী বাংলাদেশ ব্যাংককেই এখন এগিয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যে ব্যাংক তদন্ত করেছে। এখন উচিত হবে, তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মালিকদের মধ্যে বিরোধ নিরসন করে প্রকল্পটির অব্যবস্থাপনা দূর করা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন